হাতের ত্বকের যত্নের পাশাপাশি তার জন্য ক্ষতিকর কিছু বিষয়ের দিকেও সমানভাবে নজর রাখা প্রয়োজন। প্রতিদিনের জীবনযাপনের অংশে অনেক ক্ষতিকর কাজগুলোই অভ্যাসে পরিণত হয়। যা থেকে হাতের ত্বক ক্ষতির মুখে পড়ে এবং নানাবিধ ত্বকজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কোন জিনিসগুলো থেকে হাতকে দূরে রাখা প্রয়োজন।
ল্যানোলিন
লস অ্যাঞ্জেলেসের স্টে স্কিন সেফ প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সার্টিফায়েড ডার্মাটোলজিস্ট সিপোরা শেইনহাউজ জানান, তিনি সবসময় খুব সতর্কতার সাথে ল্যানোলিন (Lanolin) যুক্ত হ্যান্ড ক্রিম এড়িয়ে যান। কারণ ২.৩ শতাংশ মানুষের মাঝে এই উপাদানটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। সেই সঙ্গে ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষও করে তোলে।
পেট্রোলিয়াম বেসড হ্যান্ড ক্রিম
পেট্রোলিয়াম বেসড হ্যান্ড ক্রিমের প্রধান সমস্যাটি হল এটা খুবই তৈলাক্ত হয়। এ কারণে পেট্রোলিয়াম বেসড ক্রিমের পরিবর্তে গ্লিসারিন বেসড ক্রিম বেছে নিতে হবে। এতে হাতের ত্বক প্রয়োজন মাফিক আর্দ্রতা পেলেও চটচটে হয়ে থাকবে না।
জেল পলিশ
সহজে ব্যবহার করা যায় ও তুলে ফেলা যায় বলে ইদানিংকালে জেল নেইলপলিশ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে ডার্মাটোলজিস্ট সিপোরা শেইনহাউজ বলছেন, জেল পলিশ খুব দ্রুত নখকে শুষ্ক ও ভঙ্গুর করে দেয়। ফলে অল্পতেই নখ ভেঙে যায়। যদিও জেল পলিশ নখে বেশ লম্বা সময়ের জন্য থাকে, কিন্তু তা কোনভাবেই নখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
ডিশ সোপ
ডিশ সোপে থাকা কেমিক্যাল ও ক্ষার হাতের ত্বকের জন্য আদতেই ক্ষতিকর উপাদান। খেয়াল করে দেখবেন, নিয়মিত কয়েকদিন ডিশ সোপের সাহায্যে থালাবাসন ধোয়া হলে হাতের চামড়া খসখসে হয়ে উঠে আসে। ক্যালিফোর্নিয়ার বোর্ড সার্টিফায়েড ডার্মাটোলজিস্ট সিনথিয়া বেইলি পরামর্শ দেন থালাবাসন ধোয়ার সময় অবশ্যই হ্যান্ড গ্লভস পরে থাকার জন্য। এতে করে হাতের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার
ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংসে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। কিন্তু ভাইভ ডার্মাটোলজি প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সার্টিফায়েড ডার্মাটোজলিস্ট সুজান বার্ড জানাচ্ছেন, জীবাণু ধ্বংসে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাইতে সাধারণ সাবান অনেক বেশি কার্যকরি জিনিস। এছাড়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতের ত্বকের জন্য মোটেও ভালো নয় এবং হাতের ত্বকে বিভিন্ন ধরণের সমস্যার প্রাদুর্ভাব ঘটিয়ে থাকে।
তাপ
হাতের শুষ্ক ও চামড়া ফেটে যাওয়া ত্বক থেকে হাতের ত্বকজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে অবদান রাখে স্বাভাবিকের চাইতে উচ্চ তাপমাত্রা। বাড়তি তাপে হাতের স্বাভাবিক আর্দ্রতা হ্রাস পায়, যা হাতকে অনেক বেশি শুষ্ক করে তোলে। এ কারণে আগুণের তাপ, গরম জল, হিটার জাতীয় পণ্য থেকেও হাতকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।