বিড়াল বন্ধুসুলভ এক প্রাণী। গৃহপালিত এই প্রাণী মানুষের সঙ্গে মুহূর্তেই মিশে যেতে পারে। সামান্য আদর-যত্ন ও খাবার দিলেই বিড়াল আপনার পোষ মেনে যাবে। অনেকেই বিড়াল পছন্দ করেন। এ কারণে শখেরবশে পুষে থাকেন বিড়াল। কেউ একটি, দুটি আবার কেউ তারও বেশি।
আবার অনেকেই বিড়াল পছন্দ করেন না। তবে জানেন কি, যারা বিড়াল পুষে থাকেন; তারা শারীরিকভাবে অন্যদের তুলনায় বেশ সুস্থ থাকেন। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে বিড়াল পুষলে। এমনকি শিশুর জন্য ভালো, যদি ঘরে একটি পোষা বিড়াল থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরে বিড়াল থাকলে যেসব উপকার মেলে-
>> বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়াল পুষলে মানসিক চাপ কমে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বিড়াল পোষেন; তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে ৩০ শতাংশ কম।
>> বিড়ালের মিউ মিউ ডাক বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ধ্বনিগুলোর একটি, যা শরীরের পেশী ও অস্থির প্রদাহ নিরাময়ে থেরাপির মতো কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়াল ২০-১৪০ হার্জ শব্দ উৎপাদন করে। ফলে এটা অস্থিসন্ধি ও পেশীর চিকিৎসায় থেরাপি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।
>> গবেষণা বলছে, বিড়ালের উপস্থিতিতে ঘুম আরও ভালো হয়। মায়োক্লিনিক সেন্টার ফর স্লিপ মেডিসিনের পরামর্শ অনুযায়ী, ঘুমের সঙ্গী হিসেবে বিড়ালকে রাখতে পারেন।
>> বিড়াল গবেষক ড. জুন ম্যাক নিকোলাসের গবেষণা অনুসারে, যেসব পুরুষ বিড়াল পোষেন; নারীরা তাদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।
>> যখন কেউ বিড়ালের সঙ্গে সময় কাটায়, তখন তাদের দেহে প্রশান্তি ও আরামদায়ক রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্যক্তির রাগ, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে- এমনটিই দেখা গেছে গবেষণায়।
>> ২০০২ সালে ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক বছরের নিচের যেসব শিশু বিড়ালের প্রেমে মগ্ন থাকে; তাদের বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
>> ২০০৮ সালের এক গবেষণা অনুসারে, কুকুরের তুলনায় বিড়াল অনেক কম খাবার খায়। তাছাড়া ঘর থেকে ইঁদুর তাড়ায় বিড়াল।
>> যেসব ব্যক্তি বিড়াল পোষে তারা স্মার্ট হয়ে থাকেন। কারণ তারা অনেক ব্যস্ততার পরও বিড়ালের সেবা-যত্ন করেন। এভাবে তারা নিজের প্রতিও যত্নশীল হয়ে ওঠেন।
>> বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে, বিড়াল ঘরে থাকলে অশুভশক্তি বা আত্মা সেখানে প্রবেশ করতে পারে না। রাশিয়ার গ্রামাঞ্চলে এ বিশ্বাসটি এখনও প্রচলিত আছে।
>> বিড়াল আপনার অবসর সময়ের খুব ভালো একজন বন্ধু ও সঙ্গী হতে পারে, যা আপনাকে আনন্দ ও প্রশান্তি এনে দেবে।
আজ আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস। প্রতি বছর আগস্টের ৮ তারিখ বিড়াল দিবস পালিত হয় বিশ্বব্যাপী। বিড়াল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানুষ ও বিড়ালের বন্ধুত্ব উদযাপনের লক্ষ্যে বিশেষ এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
২০০২ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার কর্তৃক এ দিবসটি চালু করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট কেয়ার আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবসের আনুষ্ঠানিক কাস্টডিয়ান। বিড়াল দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘বিড়াল কৌতূহলী- বিড়াল এবং তাদের জন্য প্রশিক্ষণ।’