মায়ের বুকের দুধ এর উপকারিতা গুলো জেনেনিন ? বিস্তারিত ভাবে

সন্তানের জন্য মা সবসময়ই সেরাটাই দিতে চান। নিজের সন্তান ভালো থাকুক সেটা কে না চায়? বর্তমানে বাজারের বিভিন্ন কৌটাজাত দুধ মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে শিশুকে খাওয়ানো হচ্ছে। তবে অনেকেই জানেন না, মায়ের বুকের দুধ আর ফর্মুলা বা কৌটাজাত দুধের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়? কোনটা বেশি ভালো? চলুন, আজ জেনে নেয়া যাক এই সব প্রশ্নের উত্তর-

মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান নাটালি গোহ-এর মতে, মায়ের বুকের দুধ একজন শিশুর জন্য সবচেয়ে সেরা ও পুষ্টিকর খাবার। মায়ের বুকের দুধে সেসব উপাদান রয়েছে যেগুলো একটি শিশুর সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন।

মজার ব্যাপার হলো, বুকের দুধের এই পুষ্টিগুণ সময়ের সাথে সাথে শিশুর চাহিদাতে তাল মিলিয়ে বদলে যায়। শিশুর শরীরকে রোগ প্রতিরোধক করে তুলতে সাহায্য করে। এমনকি সংক্রামক রোগ থেকে তাকে দূরে রাখতে এবং নানারকম প্রদাহকে দূর করতে মায়ের বুকের দুধ সাহায্য করে। এই দুধ খুব তাড়াতাড়ি ও সহজে হজমও করা সম্ভব।

বুকের দুধ শিশু ও মায়ের সম্পর্ককে আর ভালো গড়ে তোলে। এতে কোনো খরচ হয় না এবং এটি সহজলভ্য। সবদিক দিয়ে তাই মায়ের বুকের দুধই সবচেয়ে সেরা। তবে আপনার শিশুর ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বা আপনি যদি শিশুকে দুধ পান না করাতে পারেন, সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় ফর্মুলা মিল্কের। এই দুধে একটি শিশুর দরকারি সব পুষ্টি উপাদান মজুত থাকে। তবে এটি মায়ের দুধের মতো হয় না।

কতদিন পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ শিশুকে খাওয়ানো উচিত?

অন্তত ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানো প্রয়োজন। এর বেশি যদি সম্ভব হয় তাহলে সেটাই করা উচিত। কিন্তু কোনো কারণে মায়ের বুকের দুধ শিশু না পেলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর অন্য উপায় খুঁজুন।

এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ল্যাক্টেশিয়ান কনসাল্টেন্ট। একজন ল্যাক্টেশিয়ান কনসাল্টেন্ট মা, শিশু, শিশুকে দুধ পান করানো- এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন। একইসাথে, শিশুকে কখন, কীভাবে, কতবার দুধ পান করাবেন- এসব তথ্যই জানতে পারবেন ল্যাক্টেশিয়ান কনসাল্টেন্টের কাছ থেকে।

কৌটাজাত দুধ কি ভিন্ন ভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি হয়?

বেশিরভাগ কৌটাজাত দুধের ক্ষেত্রেই প্রায় একইরকম উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোথাও কোনো উপাদান বেশি ব্যবহার করা হয়, কোথাও কম। তবে খুব বড় পরিবর্তন কোনোটাতেই থাকে না। তবে শিশুর জন্য ফর্মুলা মিল্ক চাইলে চেষ্টা করুন সেরা ব্র্যান্ডেরটাই কিনতে।

কৌটাজাত দুধ ধরন কি বদলানো যায়?

কৌটাজাত দুধ যেহেতু অনেক ব্র্যান্ডের হয়ে থাকে, তাই আপনি ইচ্ছে করলেই একটি ব্র্যান্ড থেকে অন্য ব্র্যান্ডে চলে যেতে পারেন। তবে আপনার শিশু নতুন দুধের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে কিনা তা নির্ভর করবে তার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে।

কৌটাজাত দুধ​​​​​​​ আর গরুর দুধ কি একইরকম?

সাধারনত, কৌটাজাত দুধ শিশুর শরীরের জন্য যে পুষ্টি প্রয়োজন সেটা থাকে। অন্যদিকে, গরুর দুধে শিশু সহজে হজম করতে পারবে না এমন উপাদানও থাকে। তাই, শিশুর বয়স এক বছর বা তার বেশি হওয়ার আগে তাকে গরুর দুধ না দেয়াই ভালো।

সাধারণত, শিশুরা মায়ের বুকের দুধই পান করে থাকে। তবে কোনো কারণে সেটা সম্ভব না হলে তাকে ফর্মুলা দুধ পান করান। বয়সের সাথে সাথে এই উপাদান পরিবর্তিত হবে। তাই ফর্মুলা দুধেও উপাদানের পরিবর্তন আনুন। তবে যে উপায়টিই বেছে নিন না কেন, চেষ্টা করুন আপনার শিশুর জন্য যেটা সবচেয়ে সেরা সেটিই নেয়ার!bs