শীতের সব ধরনের সবজিরই আছে অনেক রকম উপকারিতা। এই সময়ের সবজির মধ্যে শালগম অন্যতম। এটি খেতে বেশ সুস্বাদু। শুধু স্বাদেই ভালো নয়, এটি অনেক পুষ্টিকরও। শীতের মৌসুমে শালগমের তরকারি রান্না হয় প্রায় সব বাঙালি বাড়িতেই। কখনো চিংড়ির সঙ্গে ঝোল, কখনো মাছের সঙ্গে মাখা মাখা করে রান্না হয় সুস্বাদু এই সবজি।
এই সময়ের শিশু কিংবা তরুণদের বেশিরভাগই হলো সবজি-বিমুখ। তারা সবজি খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু দিনের পর দিন সবজি না খেয়ে শরীরের যে বারোটা বাজানো হচ্ছে, তা তারা টের পায় আরও পড়ে গিয়ে। একটা সময় মুখ থুবড়ে পড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তখন অসুখে ভুগে ভুগে হতাশা বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
পুষ্টিবিদ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, যে মৌসুমে যেসব সবজি ও ফল পাওয়া যায়, তা বেশি করে খেতে হবে। কারণ মৌসুমী খাবারের মধ্যেই থাকে অসুখ-বিসুখ তাড়ানোর জাদু। শীত যেহেতু সবজির ঋতু হিসেবে পরিচিত, তাই এসময়ে সবজি খেতে হবে বেশি করে। শালগমও রাখতে হবে সেই তালিকায়। ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে পর্যাপ্ত শালগম খেলে তা আপনাকে আরও বেশি সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক শালগম খাওয়ার উপকারিতা-
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
শীতকালীন সবজি শালগম ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। কারণ এতে থাকে পর্যাপ্ত গ্লুকোসিনোলেটস। এটি হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক কেমিক্যাল, যেটি সব রকমের ক্যান্সার রোধ করতে কাজ করে থাকে। তাই ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে চাইলে শীতের এই সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে শালগম। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তারা খাবারের তালিকায় শালগম রাখবেন। এতে থাকে ডায়েটারি নাইট্রেট, যা রক্ত কোষগুলোকে ভালো পরিমাণে সবকিছুই সরবরাহ করতে পারে। আর এ কারণেই দূরে থাকে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
চোখের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। ছোট ছোট ছেলেমেয়ের চোখেও দেখবেন ভারী পাওয়ারের চশমা। সবজিসহ পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার ফল এটি। তাই নিয়মিত সবজি খেতে হবে। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে কাজ করবে শালগম। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন থাকে প্রচুর। যে কারণে শালগম খেলে ছানি পড়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এইসব চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
পেটের সমস্যা দূর করে
শালগম খেলে তা পাচনতন্ত্রের নানান সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকে পর্যাপ্ত ফাইবার যা হজম ভালো রাখতে কাজ করে। এটি কোলন পরিষ্কার করে ও শরীরে জলর মাত্রা ঠিক রাখতে কাজ করে। ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়।
ওজন ঠিক রাখে
যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্য কার্যকরী একটি উপায় হলো শালগম খাওয়া। কারণ এতে থাকে পর্যাপ্ত লিপিড, যা মেটাবোলিজম ঘাটতি দূর করে। এর ফলে শরীরে ফ্যাটের মাত্রা কমে, নিয়ন্ত্রণে থাকে ব্লাড সুগার। তাই খেতে পছন্দ করুন আর না করুন, পাতে শালগম রাখা কিন্তু জরুরি!